Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

উদ্ধার ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা

 

পঞ্চমঅধ্যায়:উদ্ধার ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা

 

৫.১. ক্ষয়-ক্ষতির মূল্যায়নঃ

 

উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা একটি অতি দুর্যোগপূর্ণ জেলা। এই জেলার বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস , নদীভাঙ্গন, পাহাড়ি ঢল ও পাহাড়ি ধ্বস এবং জলবদ্ধতা অন্যতম। এর পাশাপাশি জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে সমূদ্র পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি লবণাক্ততা অপর একটি দুর্যোগ দিন দিন বেড়ে চলছে। এই সচল দুর্যোগের কারণে কৃষি মৎস্য গাছপালা পশূপাখি, স্বাস্থ্য, জীবিকায়ণ অবকাঠামো ইত্যাদি ক্ষেত্রে  ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।

 

খাতসমূহ

বর্ননা

কৃষি

কৃষিঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিগত বছরগুলোতে এই জেলার কৃষি ক্ষেত্রে পড়েছে এক ঋণাত্নক প্রভাব। গত সালে এই অঞ্চলে কৃষি জমি বা ফসল ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে র কারণে ১৪%শতাংশ, বন্যার কারণে ২৬%শতাংশ, নদী ভাঙ্গনের কারণে ৭%শতাংশ, পাহাড়ি ধ্বসের কারণে ২১%শতাংশ, জলাবদ্ধতার কারণে ১২% এবং অতিবৃষ্টি ও অন্যান্য কারণে কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতি সাদ্বিত হয়।  এই ধরণ চলতে থাকলে ভবিষ্যতের এই ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যা এ অঞ্চলসহ সমগ্র দেশের অথনীতিতে নেতি বাচক প্রভাব পড়বে।

যে সকল কারণে কৃষি কাজ ক্ষতি গ্রস্থ হয় তাহা নিন্মে উল্লেখ্য  করা হলো।

ঝড় ও জলোচ্ছাসঃ

এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাসে বোরো ও আউশ ধানের বীজতলা ও আবাদ ব্যহত হয়এবং পাকা ধান নষ্ট হয়। গ্রষ্মীকালীন সবজি চাষের বীজতলা ও সবজী ক্ষেত নষ্ট হয়।

বন্যাঃ

বন্যা মৌসুমে জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বরে আমন আবাদ ক্ষতি-গ্রস্থ হয়। এই সময়ে গ্রষ্মীকালীন সবজির আবাদ ব্যবহৃত হয়। উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও বাজার জাতের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

লবনাক্ততাঃ

চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় জেলাগুলোতে যেমনঃ বাশঁখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও বোয়ালখালীর আংশিক এলাকা লবনাক্ততায় আক্রান্ত। কর্নফুলীর উৎস স্থল আসামের লুসাউ পাহাড় হয়ে কাপ্তাই হ্রদ হয়ে কর্নফুলীর মাধ্যমে চট্টগ্রামের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হযেছে।বর্ষাকালে কাপ্তাই হ্রদের পানি নীচে নেমে গেলে কাপ্তাই হদ হতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে সমুদ্রের লোনা পানি কর্নফুলী নদীতে ডুকে পড়ে। বিশেষ করে রবি মৌসুম সেচ নির্ভর তাই রবি মৌসুমে চাষাবাদের সময়ে সেচের পানির লবনাক্ততা ফসলের সহনীয় অবস্থার বেশী হওয়াতে কোন কোন সময়ে বোরো মৌসুমে বীজতলা নষ্ট হয় এবং চারারাভাবে বোরো আবাদ ব্যহত হয়, বোরো আবাদ পরবর্তী সেচের পানিতে লবনাক্ততার কারণে ফসল কমে যায়। কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

পাহাড়ী ঢলঃ

পাহাড়ী ঢলের পানির জলাবদ্ধতার কারণে মাঝে মাঝে আমন মৌসুমে আমন আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

সেচের পানির স্বল্পতাঃ

রবি মৌসুমে এই জেলার প্রত্যেক উপজেলায় পানির সেচের অভাবে মোট জমির ৩ ভাগের ২ ভাগ প্রায় পতিত থাকে।

মৎস

মৎস্যঃ চট্টগ্রাম জেলার সৎস্য সম্পদ এবং এর সাথে জড়িত মৎসজীবিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় প্রতি বছরেই হচ্ছে ক্ষতির সম্মূখীন। ১৯৮৮ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলায় প্রায় ৫০% পুকুরের মাছ ভেসে যায়। এতে ৩৯% মৎসজীবি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ৭টি উপজেলার মোট ১৮০২৮ মৎসজীবি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।  পাহাড়ী ঢলে ৬টি উপজেলার ১৭৮৬৪ জন মৎসজীবির ক্ষতি হয়। তাতে ৬% মৎসজীবি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তিন টি উপজেলার পরিসখ্যানে দেখা যায় ৭% পুকুরের মাছের ক্ষতি হয়। জলাবদ্ধতার কারণে মীরেরস্বরাই , হাটহাজারী ও লোহাগড়ায় মোট ১৯৫৭টি পুকুরের মাছের ক্ষতি হয়

চট্টগ্রাম জেলার ৭২১৫৬ টি পুকুর ও দিঘীতে বার্ষিক ২৮৭৬৭.৬৭ হেক্টরে মাছ উৎপাদিত হয়৩৩২৮৩.৬৫ মে: টন:।গলদা চিংড়ির ২৫৫টি খামারে মোট মাছ উৎপাদিত হয় ৬২৫.৫৫ মে: টন. যাহা উক্ত জেলার মানুষের মাছের চাহিদা পূরণ করে থাকে ।কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে বন্যা, জলোচ্ছ্বাস , অতিবৃষ্টির কারণে মৎস চাষের ক্ষেত্রে নেতী বাচক প্রভাব পড়ে। মৎস চাষ চরমভাবে ব্যাহত হয়। পানিতে খাল, খামার, পুকুর, দিঘীগুলো ভেসে যায়।বাজারে মাছের সরবরাহ কুমো যায়। মৎস চাষীরা বেকার হয়ে পড়ে। মৎস শিল্প ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়্ ।

 

পশুপাখি

বন্যা ও পাহাড়ী ঢল যথাক্রমে প্রায় ৩৪%, ১৯% পশূপাখির ক্ষতি হয় । ফটিক ছড়ি, লোহাগড়া, সাতকানিয়া ও সীতাকুন্ড বন্যায় মোট ৩৬৫৭১২ পশুপাখি ক্ষতিগ্রস্থ হয় । ১৯৯১ সালের চট্টগ্রাম জেলার সিতাকুন্ড ও পটিয়ায়  উপজেলায়  ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে  ২৭৩০৯০ পশুপাখি মারাত্নক  ক্ষতি হয়।  দরিদ্র পরিবারগুলোতে গৃহপালিত পশুপাখি আমিষ ও অর্থের যোগান দেয়। পশু সম্পদের উপর অনেক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল। গৃহপালিত পশুর মধ্যে গরূ কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। বিভিন্ন দুর্যোগে পশু সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি  গ্রামীন জনগণের জীবনে মারাত্নক অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনে। এত দরিদ্র পরিবারগুলো আরো দারিদ্রতার মধ্যে জীবন-যাপন করে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন আপদের কারণে পশুসম্পদ খাতে বিশেষ করে ঝড়  ও জলোচ্ছ্বাসে  ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে যা পূর্বে ক্ষয়-ক্ষতির মাত্রা বেড়ে গেছে।

গাছপালা

১৯৯১ সালের ঝড়ে চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি উপজেলায় (ফটিক ছড়ি, সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড)  মোট ২১৭২৩৬ পাছপালা ও ৪৪৭ নার্সারী  মারাত্নকভাবে ক্ষতি হয় । বন্যায় ৬টি উপজেলায় প্রায় ৩৯১১৭১ টি গাছ ও ১২৪৭টি নার্সারী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবং পাহাড়ী ঢলে সিতাকুন্ড, চন্দ্রনাইশ ও সীতাকুন্ড মোট ৮৬০০ গাছ ও ৪৫২ টি নার্সারীর ক্ষতি হয়েছে।

 

ঘন ঘন ঝড়, জলোচ্ছ্বাস   টর্নেডোর আঘাতে প্রচুর পরিমাণ ফলজ, বনজ, ঔষধি  বৃক্ষর ক্ষতি সাধিত হয় জ্বালানী কাঠের ঘাটতি ব্যাপক আকার ধারণ করে। ফলজ গাছ নষ্ট হওয়ায় বাজারে মৌসুমী  ফলের  অভাব দেখা দেয়। ঘন ঘন বণ্যা হওয়ার কারণে দেশে যতটুকু বন থাকার কথা তার চেয়ে নিতান্তই কম আছে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে বন্যা হওয়ার কারণে প্রচুর চারা গাছ বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় এবং মরে যায়। বন্যা দীর্ঘ দিন স্থায়ী হলে অনেক গাছপালা মরে যায়।

ঘরবাড়ী

অবকাঠামো

বিভিন্ন দুর্যোগে চট্টগ্রাম জেলায় ঘরবাড়ী ও অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতি হয় বিশেষ করে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ,  বন্যায় এবং পাহাড়ী ঢলে কাচা ঘরবাড়ীর অধিকাংশই বিধ্বস্ত হয়। চট্টগ্রাম জেলায়  ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ,  বন্যায় এবং পাহাড়ী ঢলে যথাক্রমে ৫৬%,  ২৮% ও ২৭% ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নদীভাঙ্গনে লোহাগড়া, হাটহাজারী ও মীরেরস্বরাই এ ২৫৫৬৩টি পরিবারের ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে আশ্রয়হীন হতে পারে। ৫টি উপজেলায় ঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে  এবং বন্যায় যথাক্রমে ১৫২৯২০ ও ৮২৮০২ কাচাঁ ঘরবাড়ীর ক্ষতি হয়েছে। ৩৬৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। ৪৭৪ কি.মি. কাচঁ ও পাঁকা রাস্তার ক্ষতি হয়। বন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ৯৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১১০৫ কি.মি. কাচাঁ রাস্তা ও পাঁকা রাস্তা  এবং ৩১১ টি কালভার্ট ও ব্রীজ ৫৭৯ টি  ক্ষতি হয়েছে। লোহাগড়া ও মীরেরশ্বরাই উপজেলায়  পাকাসহ মোট ১৬৮৩৫ টি ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বেশকিছু  অবকাঠামোওর ক্ষতি হয়েছে।

বন্যা ও ঘূর্ণি ঝড়েরর কারণে অবকাঠামোগুলো ক্ষতি-গ্রস্থ হয়। যেমন ব্রীজ, কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির মাদ্রাসা, ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট।সাধারণ মানুষের বাসস্থানগুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ঘর-বাড়ী মেরামতের জন্য সাধারণ পরিবার এবং দরিদ্র পরিবার নিজের সম্পদ বিক্রি করে নয়তো ঋণ করে ঘর-বাড়ি মেরামত বা পূনঃ গঠন করে।

পয়নিস্কাশন

চট্টগ্রাম জেলায় মোট কাচাঁ পায়খানার ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস  এবং বন্যা ৪০% ও ২৯% ক্ষতিগ্রস্থ হয় । এবং পাহাড়ী ঢলে প্রায় ২৭% পায়খানা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।  বন্যা ও পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার ফলে পানি দূষিত হয়ে য়ায় । এতে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে  আক্রান্ত এলাকায় ডায়রিয়াসহ কলেরা, আময়শা, জন্ডিস ও বিভিন্ন চর্ম রোগ দেখা যায়। প্রতি বছর  বিভিন্ন দুর্যোগে ৩%-৬% লোক বিভিন্ন রোগে হয় ।

স্বাস্থ্য

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন আপদের কারণে  স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও এর ক্ষতির প্রভাব পড়েছে । বন্যায় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব  ঘটে । যেমন ডায়রিয়া, কলেরা, আময়শা,  জন্ডিস, চর্মরোগ ইত্যাদি রোগে ৩%-৬% আক্রান্ত হয়। বিগত জলোচ্ছ্বাসে  প্রচুর লোক মারা গিয়েছে। প্রতিটা উপজেলায় ঝড়  ও জলোচ্ছ্বাসে  এবং বন্যায় আক্রান্ত এলাকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো

 

 

 

 

৫.২ দ্রুত /আগাম পুনরুদ্ধার

 

৫.২.১ প্রশাসনিক পুনঃপ্রতিষ্ঠা

 

ক্রমিক নং

নাম

পদবী

মোবাইল

 

জেলা প্রশাসক

 

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সর্বিক)

 

 

জেলা ত্রাণ ও পূনঃবাসন কর্মকর্তা

 

 

৫.২.২ ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার

 

ক্রমিক নং

নাম

পদবী

মোবাইল

 

 মেয়র, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পর্যায়ে

 

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক

 

 

জেলা ত্রাণ ও পূনঃবাসন কর্মকর্তা

 

 

উপ-পরিচালক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স

 

 

নির্বাহী প্রকৌশলী, গনপুর্ত বিভাগ

 

 


 

৫.২.৩ জনসেবা পুনরারম্ভ

 

ক্রমিক নং

নাম

পদবী

মোবাইল

 

মেয়র, সিটি কর্পোরেশন,

 

 

জেলা প্রশাসক

 

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সর্বিক)

 

 

জেলা ত্রাণ ও পূনঃবাসন কর্মকর্তা

 

 

সিভিল সার্জন

 

 

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল

 

 

৫.২.৪ জরুরী জীবিকা সহায়তা

 

ক্রমিক নং

নাম

পদবী

মোবাইল

 

মেয়র, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পর্যায়ে

 

 

জেলা প্রশাসক

 

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সর্বিক)

 

 

জেলা ত্রাণ ও পূনঃবাসন কর্মকর্তা