দ্বিতীয় অধ্যায়: দুর্যোগ, আপদ এবং বিপদাপন্নতা
২.১ দুর্যোগের সার্বিক ইতিহাস
সাম্প্রতি বছরগুলোতে সংঘটিত দুর্যোগ এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি
ক্রঃ নং | দুর্যোগেরসময়এবংধরণ | উল্লেখ্য যোগ্য ক্ষয়ক্ষতি | ||
---|---|---|---|---|
মানুষের প্রান হানির সংখ্যা | মৃত গবাদি পশুর সংখ্যা | সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি (কোটি টাকায়) | ||
০১ | ২৫শে মে ১৯৮৫ সালে ঘূর্ণিঝড় ও সদ্বীপ উপজেলার উরির চরে জলোচ্ছ্বাস হয়। | ১২৩৫৪ | ২২২১৫ | ৭৫.০০ |
০২ | ২৯শে এপ্রিল ১৯৯১ এর প্রলয়ণকারী ঘূর্ণিঝড়ঃ সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয়। প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় উপকূলীয় দ্বীপ এবং সমগ্র দক্ষিন অঞ্চল লন্ডভন্ড হয়ে যায় । ২০ ফুট উচু জলচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অসংখ্য মানুষ পশুপাখি এবং বহুকোটি টাকার সম্পদ । | ৭৮,৬৬৩ | ২১৫০৯০ | ২৪,০০০ |
০৩ | ১৯শে মে ১৯৯৭ এর প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড়ঃ সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয়। প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে এবং জলোছ্চ্বাসে উপকুলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় । তবে পুর্ব সতর্কতা অবলম্বন ও জনগণকে যথাসময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর ইত্যাদি সমায়োচিত পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে প্রানহানী ও সম্পদের ক্ষয় ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। | ৬২ | ১৯৮৬ | ৫০০ |
০৪ | ১১ই জুন ২০০৭ তারিখে ভারী বর্ষনজনিত কারণে পাহাড়/দেয়াল ধ্বসে প্রাণহানী এবং ঘরবাড়ীর ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ১২৭ | -- | ৫.৩৬ |
০৫ | ১৫ই নভেম্বর ২০০৭ এর প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় “সিডর” সমুদ্র বন্দরে ৮নং মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম উপকূলীয় এলাকায় আঘাত না করায় এখানে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েঝছ। | ২১ জেলে নিখোঁজ | -- | ৮.৫০ |
০৬ | ২রা মে ২০০৮ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় “নার্গিস” সমুদ্র বন্দরে ৭নং মহাবিপদ সংকেত ঘোষনা করা হয় । ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে । ঘূর্ণিঝড় “নার্গিস” মায়ানমার অতিক্রম করায় বাংলাদেশে ক্ষতি কম হয়েছে। | -- | -- | -- |
০৭ | ১৭ই এপ্রিল ২০০৯ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়“বিজলী” সমুদ্র বন্দরে ৬নং মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয় । ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে । ঘূর্ণিঝড়টি ভারত অতিক্রম করায় বাংলাদেশে ক্ষতি কম হয়েছে। | ০১ | -- | ৬.৫০ |
০৮ | ২৫শে মে ২০০৯ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় “আইলা” সমুদ্রবন্দরে ৭নং মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয় । ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে । ঘূর্ণিঝড় “আইলা” ভারতে অতিক্রম করায় বাংলাদেশে ক্ষতি কম হয়েছে। | -- | -- | ৯.৫০ |
০৯ | ২০শে মে ২০১০ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় “লাইলা” সমুদ্রবন্দরে ৩নং মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয় । ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে । ঘূর্ণিঝড় “লাইলা” ভারতে অতিক্রম করায় বাংলাদেশে ক্ষতি কম হয়েছে | -- | -- | -- |
১০ | ১৮/০৮/২০০৮ তারিখে খুলশী থানাধীন লালখান বাজার ওয়ার্ডে পাহাড় ধ্বসে জানামালের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। | ১১ | -- | ২.০০ |
১১ | ০১/০৭/২০১১ তারিখে খুলশী থানাধীন টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধ্বসে জানামালের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয় | ১৭ | -- | ২.৫ |
১২ | ১১/০৭/২০১১ তারিখে মীরসরাই উপজেলাধীন আবুতোরাব বাজার সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫ জন ছাত্র মৃত্যবরণ করে। | ৪৫ | -- | -- |
১৩ | ১৪/০৮/২০১১ তারিখে বিশ্ব ব্যাংক কলোনীতে পাহাড় ধ্বসে ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ০২ | -- | ০.৫ |
১৪ | ২৪/০৬/২০১২ তারিখে পাহাড় ধ্বসে পাহাড়ী ঢল এবং বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ৩৫ | -- | ১০.০ |
১৫ | ১১/১০/২০১২ তারিখে মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে বৃষ্টি ও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ০৪ | -- | ৩.০ |
১৬ | ২৪/১১/২০১২ তারিখে বহদ্দার হাট চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের নির্মাণধীন ফ্রাইওভার ধ্বসে দুর্ঘটনায় প্রাণহানী ঘটে। | ১৩ | -- | -- |
১৭ | মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁশির আদেসের প্রেক্ষিতে সহিংসতায় চট্টগ্রাম জেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ০৬ | ০২ | ১৯.১৭ |
১৮ | ২৮/০৭/২০১৩ তারিখে খুলশী থানাধীন লালখান বাজার ট্যাংকী পাহাড় ধ্বসে ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ০২ | -- | -- |
১৯ | অন্যান্য দুর্যোগ উপরোক্ত দুর্যোগ ছাড়াও বন্যা, জলাবদ্ধতা, নদী ভাংগন, অগ্নিকান্ড, নৌকাডুবি, বন্য হাতীর আক্রমণ ইত্যাদি দুর্যোগে চট্টগ্রাম জেলা ভুমিকম্পন ঝুঁকিপূর্ণ জেলা। |
|
|
|
২.২ আপদসমুহ
আপদ | অগ্রাধিকার |
1. ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস | 2.ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস |
3. বন্যা | ২.বন্যা |
4. নদী ভাঙ্গন | ৩.নদী ভাঙ্গন |
5. টর্নেডো | ৪.পাহাড় ধ্বস |
6. কালবৈশাখী ঝড় | ৫.অতিবৃষ্টি |
7. পাহাড় ধ্বস | ৬. জলাবদ্ধতা |
8. অতিবৃষ্টি |
|
9. জলাবদ্ধতা |
|
10. মৎস ট্রলার ও নৌকাডুবি |
|
11. বন্যহাতির আগ্রাসন |
|
12. ভুমি |
|
২.৩ বিভিন্ন আপদ ও তার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিত্র বিস্তারিত বর্ননাঃ
ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসঃ
বন্যা ঃ
চট্টগ্রাম জেলা অতি মাত্রায় একটি বন্যা কবলিত এলাকা। আষাঢ় মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত বন্যা অব্যাহত থাকে। যার ফলে এলাকায় কৃষি, মৎস, অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, যোগাযোগ প্রভৃতি খাতের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়্। আবাদী জমিতে পলি পড়ার কারণে কোন ফসল চাষ করা যায় না। য়ার ফলে এলাকার প্রায় ১৯৫০০ হেক্টর জমিতে বালি পড়ার কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। প্রতি বছর কম-বেশী বন্যা হলেও ১৯৮৫, ১৯৯১, ১৯৯৭, ২০০৭, ২০০৯ সালের বন্যা ছিল সবচেয়ে মারাত্নক।
নদীভাঙ্গন ঃ
বাশঁখালী, সন্দ্বীপ , আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সিতাকুন্ড, মিরেরসরাই, উপজেলায় নদীভাঙ্গন বেশী হয়। প্রতি বছর নদীভাঙ্গন অব্যাহত থাকে। আষাঢ় মাস থেকে আর্ষিন মাস পর্যন্ত নদীভাঙ্গন হয়ে তাকে। ইহার ফলে এলাকার কৃষি ফসল, ঘরবাড়ী, রাস্তা-ঘাট, গাছপালা ব্যাপক হারে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ফলে মানুষের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হয়। মানুষ আশ্রায়হীন হয়ে যায়্ এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়। পশু ও সাঙ্গু নদীতে ভাঙ্গন হচ্ছে। সরকারী ভাবে নদীতে ব্লক দ্বারা বাধঁ ও নদী ড্রেজিং করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন এবং বন্যার সময় পানির গতি কমানোর জন্য টি বাধঁ নির্মাণ করা না হলে বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ কমে যাবে এবং আবাসস্থল বিলীন হয়ে যাবে।
কালবৈশাখী ঃ
এই ঝড়ে কাচাঁ, আধা পাকা ঘরবাড়ী, গাছপালা এবং বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এই ঝড় কম-বেশী হতে পারে। তাই ভবিষ্যতে নিরাপদ থাকার জন্যঘরবাড়ীগুলো একটু মজবুত করে বানাতে হবে এবং পরিকল্পিতভাবে গাছপালা লাগানোও বন রক্ষাকরতে হবে।
অতিবৃষ্টি ঃ
অতি বৃষ্টির কারণে ঘর-বাড়ী ধ্বসে যায়। ফসরের ক্ষতি হয়। ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় বা দেয়াল ধ্বসে প্রাণহানী হয়ে থাকে। মৎস খামার, পুকুর ভেসে যায়। পশু সম্পদের ক্ষতি হয় এবং পশুর খাদ্যাভাব দেখা দেয়। পানি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এলাকায় ডায়রিয়া দেখা দেয়
লবনাক্ততা ঃ
সমূদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় সমদ্রের লবনাক্ত পানি জোয়ারে এবং বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। লবনাক্ত প্রবন উপজেলা হলো পটিয়া, আনোয়ারা, বাশঁখালী, বোয়ালখালী, সিতাকুন্ড, মীরেরশ্বরাই , সন্দ্বীপ ।
২.৪ বিপদাপন্নতাও সক্ষমতা
আপদ | বিপদাপন্নতা | সক্ষমতা |
---|---|---|
ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস / কালবৈশাখী ঝড় | · অপরিকল্পিত ও অবৈধ ভাবে গাছ-পালা নিধন । · গাছ-পালা নিধনের ফলে বসত-বাড়ীর চারপাশে ঝোপ-ঝাড় জাতীয় গাছপালা না থাকা। · অপরিকল্পিত ও দুর্যোগ সহনশীল ঘরবাড়ী নির্মাণ না করা। · দুর্যোগ সহনশীল ফসলের চাষাবাদে আগ্রহী না হওয়া এবং দুর্যোগ সহনশীল ফসলের চাষাবাদ না করা। · এলাকার অবকাঠামো সমূহ নিয়মিত সংস্কার না করা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন অবকাঠামো তৈরী না করা। · এলাকায় কাচা ল্যাট্রিনগুলো দুর্বল ভাবে নির্মাণ · গবাদি পশু পাখীর জন্য পর্যাপ্ত আবাসস্থল না থাকা এবং যেগুলো আছে সেগুলো দুর্বল ভাবে নির্মাণ ও নিয়মিত সংস্কার না করা। · প্রয়োজনের তুলনায় সরকারী / বেসরকারী ভাবে আশ্রয় কেন্দ্রর পরিমান কম থাকা এবং নিয়মিত সংস্কার না করা। | · বেশী পরিমানে গাছ রোপন করা · দুর্যোগ সহনশীল ঘরবাড়ী নির্মাণ করা · দুর্যোগ সহনশীল ফসলের চাষাবাদ করা · বসত-বাড়ীর চারপাশে ঝোপ-ঝাড় জাতীয় গাছপালা রোপন করা · কাঁচা ল্যাট্রিনগুলো দুর্যোগ সহনশীল করে নির্মাণ করা · গবাদি পশূর আবাসস্থল দুর্যোগ সহনশীল করে তৈরী করা · সরকারী/বেসরকারী উদ্যোগে বহুমূথী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা |
বন্যা | · পলি জমে নদীওখালেরনব্যতাহারিয়ে যাওয়া বা নব্যতা নাথাকার ফলে অল্প বন্যাতেই জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। · বাঁধ নির্মানে সদূরপ্রসারি পরিকল্পনার অভাব এবং চাহিদারতুলনায়কমওদুর্বলবাঁধ নির্মাণ । · বাঁধেরদুধারেগাছলাগানোনাথাকা এবং যেগুলো আছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ সঠিক ভাবে না করা। · বাধের উপর অবৈধ স্থাপনা · উচু স্থানে ও দুর্যোগ সহনশীল ঘরবাড়ী নির্মাণ না করা । | · নদীওখালেরনব্যতাবৃদ্ধিরজন্যনিয়মিত ড্রেজিংকরা · বাঁধেরদুধারেগাছলাগানো এবং সেগুলো রক্ষনাবেক্ষণের জন্য জনসমষ্ঠি ভিত্তিক উদ্দ্যোগ গ্রহন করা। · জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবকে মাথায় রেখে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে চাহিদা অনুযায়ী নতুনকরেবেড়ীবাঁধনির্মাণ । · বাঁধের উপর স্থাপিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সহ পুরাতনবাঁধসংস্কার করা। · এলাকায়পরিকল্পিতভাবে তুলনামুলক ভাবে উচু স্থানেদুর্যোগসহনশীলঘরবাড়ী নির্মাণ করা। |
নদী ভাঙ্গন | · নদীর পাড়গুলি ব্লক দিয়ে না আটকানো · দুর্বলবাঁধ · নদীরধারেব্যাপকভাবে উপকূলীয়বনায়ননাথাকা · যেখানেবাঁধআছেতাপ্রায়বিভিন্নঅংশেভাঙ্গা | · উপকূলীয়এলাকায়নির্ধারিতদূরত্বেঘরবাড়ী নির্মাণ করা · বাঁধ মেরামতসহবেশীকরেগাছপালালাগানোরসুযোগআছেযামাটিকেশক্তকরতে সাহায্যকরবে · রাস্তারদুধারেগাছরোপণকরা |
পাহাড়ী ঢল | · পাহাড় থেকে নির্ধারিত দূরত্বে ঘরবাড়ী নির্মাণ না করা · লোকজন পাহাড়ী ঢল সম্পর্কে সচেতন না থাকা। · ঘরবাড়ী গুলি দূর্যোগ সহনশীল বা মজবুত করে নির্মাণ না করা। | · ঘরবাড়ী পাহাড়ের পাদদেশে নির্মাণ না করা এবং পাহাড় থেকে নির্ধারিত দূরত্বে ঘরবাড়ী নির্মাণ · ঘরবাড়ী গুলি দুর্যোগ সহনশীল ও মজবুত করে তৈরী করা · পাহাড়ী ঢল সম্পর্কে লোকজনকে সচেতন করা । |
লবনাক্ততা | · জলবায়ূ পরিবর্তন · অপরিকল্পিত ও অবৈধ ভাবে গাছ-পালা নিধন । | · লবনাক্ততা সহনশীল চাষাবাদের প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া। · বেশী পরিমানে গাছ রোপন করা · জলবায়ূ পরিবর্তন সম্পর্কে জনসচেনতা গড়ে তোলা। |
২.৫ সর্বাধিক বিপদাপন্ন এলাকা
ক্রমিক নং | উপজেলার নাম | নদী ভাঙ্গন | ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস | জলাবদ্ধতা | বন্যা | পাহাড়ী ঢল ও পাহাড়ী ধ্বস | লবনাক্ততা | আর্সনিক |
০২ | ফটিক ছড়ি |
|
|
|
|
|
|
|
০৩ | বাঁশখালী |
|
|
|
|
|
|
|
০৪ | লোহাগড়া |
|
|
|
|
|
|
|
০৫ | বোয়ালখালী |
|
|
|
|
|
|
|
০৬ | আনোয়ারা |
|
|
|
|
|
|
|
০৭ | সাতকানিয়া |
|
|
|
|
|
|
|
০৮ | পটিয়া |
|
|
|
|
|
|
|
০৯ | সন্দ্বীপ |
|
|
|
|
|
|
|
১০ | চন্দনাইশ |
|
|
|
|
|
|
|
১১ | সীতাকুন্ড |
|
|
|
|
|
|
|
১২ | রাউজান |
|
|
|
|
|
|
|
১৩ | হাটহাজারী |
|
|
|
|
|
|
|
১৪ | রাংগুনীয়া |
|
|
|
|
|
|
|
১৫ | মীরেরস্বরাই |
|
|
|
|
|
|
|
২.৬. উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রধান খাতসমূহঃ
প্রধান খাত সমূহ | বিস্তারিত বর্ণনা | দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সাথে সমন্বয় |
---|---|---|
কৃষি | চট্টগ্রাম জেলায় বিভিন্ন দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়। বছরের বিভিন্ন সময় যে দুর্যোগগুলো হয় তাতে কৃষিখাতে বন্যা, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস , নদী ভাঙ্গন, পাহাড়ী ঢল ও জলাবদ্ধতায় যথাক্রমে প্রায় ২৬%, ১৪%, ৭%, ২১% ও ৯% আবাদী জমির ফসলের ক্ষতি হয়।
ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ৬ টি (ফটিকছড়ি, সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড ও হাটহাজারী) উপজেলার মোট ২৭৫৩১১ একর জমির মধ্যে ৩৬৯২৬ একর জমির ফসল নষ্ট হয়। ৯ উপজেলার মোট ৫৩৮৫৮ একর ফসলের ক্ষতি হয় । বন্যায় ৯টি (ফটিকছড়ি,লোহাগড়া, সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড, হাটহাজারী, রাংগুনীয়া ও মীরেরশ্বরাই ) উপজেলার মোট ৮০৯৭৫ একর ফসলের ক্ষতি হয়। নদী ভাঙ্গনে ৬টি উপজেলার মোট ১১০৯৮৯ একর জমির মধ্যে ৯৫৭০ একর জমি নদী ভাঙ্গনের শিকার হতে পারে। | · বেড়ীবাঁধমেরামত করে শক্তবামজবুতকরা · পানিনিস্কাশনব্যবস্থাউন্নতকরা · আমনধানেরচারাউৎপাদনেবৃষ্টিরপানিব্যবহার · জমিতেজৈবসারব্যবহারকরা · খালখননওসেচব্যবস্থাউন্নয়নকরা · লবন সহিষ্ণু ধানের জাত সম্প্রসারন (বোরো, আমন, আউস) · বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। · কৃষিতে ভরতুকি প্রদান · সুদমুক্ত ঋণ প্রদান।
|
মৎস্য | চট্টগ্রাম জেলায় বিভিন্ন দুর্যোগে মৎস খাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয় । মৎস খাতে বিভিন্ন দুর্যোগে বন্যা, নদী ভাঙ্গন, পাহাড়ী ঢল ও জলাবদ্ধতায় যথাক্রমে প্রায় ৫০%, ১৪%, ৩৪% ও ১১% পুকুরের মাছের ক্ষতি হয়। বন্যায় ৬টি উপজেলায় ৯৬৯৭টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং বন্যায় ৭টি উপজেলায় ১৮০২৮জন মৎসজীবি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড়ী ঢলে ৬টি উপজেলার ১৭৮৬৪ জন মৎসজীবির ক্ষতি হয়েছে।নদীভাঙ্গনে ৬টি উপজেলায় ৭৪৯৪ জন মৎসজীবি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। | · পুকুরের পাড় ঊচুকরণ · বাঁধমেরামতওমজবুতকরতেহবে · মৎস্যচাষীদেরজন্যপ্রশিক্ষণ এরব্যবস্থাকরতেহবে · তিনস্তরবিশিষ্টমৎসচাষকরা · বন্যাওজলাবদ্ধতারসময়জালবেষ্টিতরাখা · ক্ষতিগ্রস্থদরিদ্রমৎস্যচাষীদেরজন্যসহায়তাপ্রদানকরা · মাছের বাজারজাত উন্নতকরণ |
পশুসম্পদ | বন্যা ও পাহাড়ী ঢল যথাক্রমে প্রায় ৩৪%, ১৯% পশূপাখির ক্ষতি হয় । ফটিক ছড়ি, লোহাগড়া, সাতকানিয়া ও সীতাকুন্ড বন্যায় মোট ৩৬৫৭১২ পশুপাখি ক্ষতিগ্রস্থ হয় । ১৯৯১ সালের চট্টগ্রাম জেলার সিতাকুন্ড ও পটিয়ায় উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ২৭৩০৯০ পশুপাখি মারাত্নক ক্ষতি হয়। দরিদ্র পরিবারগুলোতে গৃহপালিত পশুপাখি আমিষ ও অর্থের যোগান দেয়। পশু সম্পদের উপর অনেক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল। গৃহপালিত পশুর মধ্যে গরূ কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। বিভিন্ন দুর্যোগে পশু সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি গ্রামীন জনগণের জীবনে মারাত্নক অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনে। এত দরিদ্র পরিবারগুলো আরো দারিদ্রতার মধ্যে জীবন-যাপন করে। | · মাটিরকিল্লানির্মাণ করা · সরকারীপতিত/খাসজমিতেগবাদিপশুরচারণ ভূমিতৈরীকরা · আপদসহনশীলসংকরজাতীয়পশুপাখীচাষেউদ্ধুদ্ধকরা · পশুরটিকাসরবরাহনিশ্চিতকরা · গবাদী পশুর আবাস্থল দুর্যোগ সহনশীল করে তৈরী করা · গবাদী পশুর রোগ ব্যাধি ও চিকিৎসা সম্পর্কে লোকজনকে সচেতন করা · গবাদী পশুর খাদ্য প্রক্রিয়া জাতকরণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা |
ঘরবাড়ী ও অবকাঠামো | বিভিন্ন দুর্যোগে চট্টগ্রাম জেলায় ঘরবাড়ী ও অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতি হয় বিশেষ করে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে , বন্যায় এবং পাহাড়ী ঢলে কাচা ঘরবাড়ীর অধিকাংশই বিধ্বস্ত হয়। চট্টগ্রাম জেলায় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে , বন্যায় এবং পাহাড়ী ঢলে যথাক্রমে ৫৬%, ২৮% ও ২৭% ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নদীভাঙ্গনে লোহাগড়া, হাটহাজারী ও মীরেরস্বরাই এ ২৫৫৬৩টি পরিবারের ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে আশ্রয়হীন হতে পারে। ৫টি উপজেলায় ঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে এবং বন্যায় যথাক্রমে ১৫২৯২০ ও ৮২৮০২ কাঁচা ঘরবাড়ীর ক্ষতি হয়েছে। ৩৬৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। ৪৭৪ কি.মি. কাচঁ ও পাঁকা রাস্তার ক্ষতি হয়। বন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় ৯৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১১০৫ কি.মি. কাচাঁ রাস্তা ও পাঁকা রাস্তা এবং ৩১১ টি কালভার্ট ও ব্রীজ ৫৭৯ টি ক্ষতি হয়েছে। লোহাগড়া ও মীরেরশ্বরাই মীরেরশ্বরাই উপজেলায় পাকাসহ, মোট ১৬৮৩৫ টি ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বেশকিছু অবকাঠামোওর ক্ষতি হয়েছে। | · ঘরবাড়ীসহ সকল অবকাঠামো (স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দীন, অফিন ইত্যাদি) সর্বোচ্চ বন্যা লেভেলের চেয়ে উঁচুতেওপাকাঅবকাঠামো নির্মাণ। · ঘরবাড়ীসহ সকল অবকাঠামো (স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দীন, অফিন ইত্যাদি) ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সহনশীল করে নির্মাণকরা · নদী ভাঙ্গন এলাকায় স্বল্প খরচের ঘরবাড়ীও বিভিন্ন অবকাঠামে নির্র্মাণ করা । · রাস্তাউঁচুওপাকাকরা · প্রয়োজনীয়কালভার্টওব্রীজনির্মাণকরা · পর্যাপ্তসাইক্লোনসেন্টারনির্মাণ করা · অবকাঠামোস্থাপনারচারদিকে, রাস্তাওখালসমূহেরদুইধারেবৃক্ষরোপনকরা · সকল অবকাঠামো দুর্যোগ সহনশীল করে নির্মাণ করা · ঘরবাড়ী সহ সকল অবকাঠামোর চারিদিকে বেশী বেশী গাছ লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করা । |
পয়ঃনিষ্কাশন
| চট্টগ্রাম জেলায় মোট কাচাঁ পায়খানার ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এবং বন্যা ৪০% ও ২৯% ক্ষতিগ্রস্থ হয় । এবং পাহাড়ী ঢলে প্রায় ২৭% পায়খানা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বন্যা ও পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার ফলে পানি দূষিত হয়ে য়ায়। এতে বিভিন্ন পারিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে আক্রান্ত এলাকায় ডায়রিয়াসহ কলেরা, আময়শা, জন্ডিস ও বিভিন্ন চর্ম রোগ দেখা যায়। প্রতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগে ৩%-৬% লোক বিভিন্ন রোগে হয় । | · পায়খানাসর্বোচ্চ বন্যা লেভেলের চেয়ে উঁচুতেওপাকাপায়খানা নির্মাণ। · টিউবয়েল বন্যা লেভেলের চেয়ে উঁচুতে নির্মাণ টিউবয়েলের গোড়া পাকা করা। · পায়খানা ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সহনশীল করে নির্মাণকরা · নদী ভাঙ্গন এলাকায় স্বল্প খরচের পায়খানা নির্র্মাণ |
গাছ পালা
| ১৯৯১ সালের ঝড়ে চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি উপজেলায় (ফটিক ছড়ি, সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড) মোট ২১৭২৩৬ পাছপালা ও ৪৪৭ নার্সারী মারাত্নকভাবে ক্ষতি হয় । বন্যায় ৬টি উপজেলায় প্রায় ৩৯১১৭১ টি গাছ ও ১২৪৭টি নার্সারী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবং পাহাড়ী ঢলে সিতাকুন্ড, চন্দ্রনাইশ ও সীতাকুন্ড মোট ৮৬০০ গাছ ও ৪৫২ টি নার্সারীর ক্ষতি হয়েছে। | · বড় বড় ঝড় হাওয়া সহনশীল গাছ, যেসব গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করে সেসব গাছ বাড়িরআশেপাশে, রাস্তার/বাঁধ/খাস জমি বা পতিত জমিতে লাগানোর ব্যবস্থা করা । · বড় বড় গাছ যা শক্তিশালী ঝড়েও ক্ষতি কম হয় এমন গাছের ব্যাপকভাবে বনায়ন করা। · দীঘ দিন বন্যার পানি সহনশীল বৃক্ষ রোপন করা। · লবনাক্ততা সহনশীল বৃক্ষ রোপন করা। · বাড়িরআশেপাশেএবয় ফাকা জায়গায় বেশী বেশী গাছ লাগানোর জন্য এলাকা বাসীকে উদ্বুদ্ধ করা এবং পরিবেশবিষয়েসচেতনতাবৃদ্ধিকরা · অবৈধ্যভাবেগাছকাটানিয়ন্ত্রণকরাজন্যআইনগতব্যবস্থাগ্রহনওপ্রয়োগকরা |
২.৭ সামাজিক মানচিত্র
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস